বুলগেরিয়ায় কর্মসংস্থান: বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন সুযোগ
- Shimul Hossain
- Apr 23
- 2 min read
ইউরোপের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বুলগেরিয়া বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক (RMG) খাতে ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া শুরু করেছে বুলগেরিয়ার কোম্পানিগুলো।

এই লেখায় আমরা বিস্তারিত জানবো বুলগেরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ, বেতন-ভাতা, আবেদন প্রক্রিয়া, খরচ এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে।
বুলগেরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের যাত্রা শুরু
প্রথমবারের মতো RMG সেক্টরে নিয়োগ:বুলগেরিয়ায় গার্মেন্টস শিল্পে এটিই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়া হচ্ছে। পূর্বে ইংল্যান্ডে অল্পসংখ্যক বাংলাদেশি এই সেক্টরে কাজ করলেও বুলগেরিয়ায় এটি একটি মাইলফলক।
কোম্পানি ও চাহিদা:২০২২ সালে এন্টনভিল (AntoanVill) এবং মিজিয়া-৯৬এডি (Mizia-96AD) নামক দুটি কোম্পানি প্রায় ১০০ জন দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়। আগামী বছরগুলোতে এই সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বেতন ও সুযোগ-সুবিধা
মূল বেতন
মাসিক ৪৬০ ইউরো (প্রায় ৫০,০০০ টাকা, ১ ইউরো ≈ ১০৯ টাকা হিসাবে)।
বাংলাদেশে সমপর্যায়ের চাকরিতে গড় বেতন মাসিক ৮,০০০–৯,০০০ টাকা। অর্থাৎ, বুলগেরিয়ায় বেতন ৫–৬ গুণ বেশি।
অতিরিক্ত সুবিধা
বিমান ভাড়া: কর্মীদের জন্য দুই-way টিকেট প্রদান।
খাবার ভাতা: মাসিক ৫০ ইউরো।
বাসস্থান: ৩–৪ জনের শেয়ার্ড রুম (ইউটিলিটি বিল কর্মীদের দায়িত্বে)।
আবেদন প্রক্রিয়া ও খরচ
দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা
বাংলাদেশ অফিসিয়াল এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েএসএল, BOESL) এই প্রক্রিয়া তদারকি করছে।
খরচের বিবরণ
মোট খরচ: ৫২,০০০ টাকা।
সার্ভিস চার্জ: ৪২,০০০ টাকা (বোয়েএসএল-এর মাধ্যমে)।
অন্যান্য খরচ: ১০,০০০ টাকা (ডকুমেন্টেশন ও মেডিকেল চেকআপ)।
সমালোচনা
বোয়েএসএল-এর সার্ভিস চার্জকে অনেকেই অযৌক্তিক মনে করছেন। জাতীয় সংস্থা হওয়ায় কম খরচে সেবা দেওয়ার দাবি উঠেছে।
যোগ্যতা ও শর্তাবলী
বয়সসীমা: ২০–৩৫ বছর।
লিঙ্গ: নারী ও পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন।
দক্ষতা: RMG সেক্টরে পূর্ব অভিজ্ঞতা অগ্রাধিকার পাবে।
বুলগেরিয়ায় জীবনযাত্রা: সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ
ইতিবাচক দিক
উচ্চ আয়: বাংলাদেশের তুলনায় সঞ্চয়ের সুযোগ বেশি।
ইউরোপীয় অভিজ্ঞতা: ভবিষ্যতে জার্মানি বা ফ্রান্সের মতো দেশে কাজের সুযোগ বাড়তে পারে।
সতর্কতা
জীবনযাত্রার ব্যয়: ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ, পানি) নিজেদের বহন করতে হবে।
সাংস্কৃতিক পার্থক্য: ভাষা ও খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হতে সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি: বুলগেরিয়ায় কর্মরতরা বাড়ি পাঠাতে পারেন মাসিক ৩০,০০০–৪০,০০০ টাকা।
দক্ষতা রপ্তানি: RMG কর্মীরা আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড শিখে দেশে ফিরে শিল্প উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন।
ভবিষ্যত সম্ভাবনা
নতুন কোম্পানির সম্প্রসারণ: ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৫০০ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যান্য সেক্টরে সুযোগ: কৃষি ও নির্মাণ খাতে বাংলাদেশিদের জন্য চাহিদা বাড়তে পারে।
আবেদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও তথ্য
বোয়েএসএল ওয়েবসাইট: www.boesl.gov.bd
নথিপত্র: পাসপোর্ট, একাডেমিক সনদ, অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট।
বুলগেরিয়ার ওয়ার্ক ভিসা হোস্টিং এগ্রিমেন্ট বাংলাদেশি আরএমজি কর্মীদের জন্য এক অভূতপূর্ব সুযোগ উন্মুক্ত করেছে। ২০২২ থেকে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ এখনও চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তার লাভ করবে। কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রস্তুত করে, ভাষা–সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রম করে, এবং আর্থিক প্ল্যানিং যথাযথভাবে করলে এই ভিসা প্রক্রিয়া আপনাকে স্বপ্ন পূরণের পথে নিয়ে যাবে।
আপনার প্রশ্ন থাকলে বা সাহায্য লাগে, মন্তব্য করুন—আমরা আপনাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
সোর্স : টিবিএস নিউজ
Comentários