জার্মান নাগরিকত্ব নীতি পরিবর্তন: অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ
- Shimul Hossain
- 4 days ago
- 2 min read
সম্প্রতি জার্মানির রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। নতুন জোট সরকার, যেখানে CDU/CSU এবং SPD একসাথে কাজ করছে, নাগরিকত্ব প্রদানের ফাস্ট ট্র্যাক বা দ্রুত প্রাপ্তির নীতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিয়ম
SPD নেতৃত্বাধীন আগের সরকার ২০২৪ সালের জুন মাসে দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য একটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রক্রিয়া চালু করেছিল। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সি-ওয়ান লেভেলের জার্মান ভাষা দক্ষতা, কমিউনিটিতে অবদান রাখা, স্বেচ্ছাসেবী কাজ বা শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতি প্রদর্শন করে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ ছিল।
পরিবর্তনের কারণ
নতুন জোট সরকারের মতে, মাত্র তিন বছরের মধ্যে একজন অভিবাসীকে পুরোপুরি কমিউনিটিতে মিশে যাওয়ার জন্য এটি যথেষ্ট সময় নয়। CDU এবং CSU এই নিয়মকে শুরু থেকেই "তাড়াহুড়া নাগরিকত্ব" বলে সমালোচনা করে আসছিল।
নতুন নিয়ম
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য পাঁচ বছর ধারাবাহিকভাবে জার্মানিতে বসবাস এবং অন্তত বি-ওয়ান লেভেলের জার্মান ভাষা জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এছাড়া ডুয়াল নাগরিকত্বের সুবিধাও বহাল থাকবে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের নাগরিকদের জন্য আগের তুলনায় সহজ হবে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
এই পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সেই অভিবাসীরা যারা ইতোমধ্যে সি-ওয়ান লেভেলের দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং সমাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। দ্রুত নাগরিকত্বের সুযোগ হারানোর কারণে অনেকের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছেন এবং কেউ কেউ বিকল্প দেশে স্থায়ী হওয়ার কথা ভাবছেন।
অভিবাসন প্রবাহে সম্ভাব্য পরিবর্তন
নাগরিকত্বের কঠোর নিয়মের কারণে জার্মানিতে অভিবাসনের হার কমতে পারে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মেধাবী কর্মীদের মধ্যে জার্মানির প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর তুলনায় জার্মানি কম আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।
ভবিষ্যৎ ভাবনা
দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষা এবং নাগরিকত্ব পাওয়ার নিরাপত্তাহীনতা নতুন আগত অভিবাসীদের জন্যও নিরুৎসাহজনক হতে পারে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মেধাবী কর্মীদের মধ্যে জার্মানির প্রতি আগ্রহ কমতে পারে, যা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর দিকে অভিবাসন প্রবাহ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
অভিবাসন হ্রাসের ফলে জার্মান অর্থনীতিতে দক্ষ জনবলের অভাব দেখা দিতে পারে। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য এটি একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও গবেষণার ক্ষেত্রে।
নাগরিকত্ব নীতির এই পরিবর্তন জার্মান অভিবাসন নীতিতে একটি বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। অভিবাসী এবং আন্তর্জাতিক দক্ষ কর্মীদের আকর্ষণ করতে জার্মানিকে আরও নমনীয় নীতি গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।
Comments