জার্মানীতে বসবাসরত ইমিগ্র্যান্টসদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ দেশ ছাড়তে যায়। কেন?
- Shimul Hossain

- Jul 21
- 2 min read
বর্তমানে জার্মানীতে অবস্থানরত অভিবাসীদের একটি বড় অংশ—প্রায় এক-চতুর্থাংশ—দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করছেন। সম্প্রতি জার্মানির IAB (Institute for Employment Research) পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৫০,০০০ অভিবাসীর মধ্যে ২৬% অর্থাৎ প্রায় ২.৬ মিলিয়ন মানুষ জার্মানি ছাড়ার কথা ভাবছেন। যদিও এদের মধ্যে মাত্র ৩% লোকের পরিকল্পনা সুস্পষ্ট, বাকিরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।

কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ শুধুমাত্র চাকরি বা অর্থনৈতিক সুযোগ নয়—বরং রয়েছে গভীর সামাজিক ও মানসিক অসন্তোষ। আশ্চর্যের বিষয় হলো, যারা দেশ ছাড়ার কথা ভাবছেন, তাদের বড় অংশই উচ্চশিক্ষিত, ভালো আয় করেন, এবং জার্মান ভাষায় দক্ষ। তারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও মনে করছেন, জার্মান সমাজে তারা এখনও পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য হননি।
মূল সমস্যাগুলো কী?
জরিপ অনুযায়ী, অভিবাসীদের দেশত্যাগের অন্যতম কারণ হলো:
কঠিন প্রশাসনিক প্রক্রিয়া বা بيرোক্রেসি
উচ্চ করের হার
কর্মস্থলে বৈষম্য
সরকারি দপ্তরের উদাসীন আচরণ
সামাজিক অন্তর্ভুক্তির অভাব
সাংস্কৃতিক বৈষম্য ও মানসিক চাপ
অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, জার্মানিতে বছরের পর বছর কাটিয়ে, ভাষা শিখে, উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেও তারা সমাজে ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’ হিসেবে বিবেচিত হন। একজন অভিবাসী জানান, দশ বছর জার্মান ভাষা ও সমাজে সম্পৃক্ত হয়ে থাকার পরেও, বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে তাকে সরাসরি বলা হয়, "No, lieber Deutsche" — অর্থাৎ, “আমরা একজন জার্মানকে পছন্দ করি না”।
আশার আলো
সবচেয়ে ইতিবাচক বিষয় হলো—জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৭% এখনো জার্মানিতে স্থায়ীভাবে থাকতে চান। ১২% মানুষ অস্থায়ীভাবে থাকতে চান এবং বাকিরা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এটা বোঝায়, সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করা সম্ভব।
সরকার কী করতে পারে?
IAB সরকারের প্রতি সুপারিশ করেছে:
পারিবারিক পুনর্মিলন সহজ করা
ট্যাক্স ইনসেনটিভ চালু করা
সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো
একটি আধুনিক ও ডিজিটাল কর্মসংস্থান সংস্থা গঠন
এইসব উদ্যোগ অভিবাসীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি থাকার ইচ্ছা জাগাতে পারে এবং দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শেষ কথা
জার্মানির উচিত কেবল দক্ষ অভিবাসী আকর্ষণ করাই নয়, বরং একটি সহনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শ্রদ্ধাশীল সমাজ গড়ে তোলা। যেখানে বৈচিত্র্য হবে শক্তি, আর প্রতিভা পাবে যথাযথ স্বীকৃতি। না হলে, যে মানুষগুলো দেশের জন্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারতেন, তারাই হয়তো অন্য কোথাও চলে যাবেন। আর সেটাই হতে পারে ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় ক্ষতি।
_edited.jpg)



Comments