গ্রিসে কৃষি শ্রমিকদের জন্য ভিসা সমস্যা সমাধানের পথে | গুরুত্বপূর্ণ আপডেট - 2025
- Shimul Hossain

- Jun 23
- 2 min read
জুন মাসের মধ্যেই গ্রিস সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা বিদেশি তৃতীয় বিশ্বের—বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, আলবেনিয়া, জর্জিয়া প্রভৃতির—কৃষি শ্রমিকদের জন্য ভিসা সংক্রান্ত দীর্ঘপ্রতীক্ষিত সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলবে । ভিসা বিলম্বের মূল কারণ হিসেবে গ্রিসিয়ান কনস্যুলেটগুলোতে নিষ্ক্রিয়তা এবং কাগজপত্র যাচাই-প্রক্রিয়ার ধীরতার কথা উঠে এসেছে, যা ক্ষতি করে ন্যূনতম শ্রমিক রিক্রুটমেন্টের ও ফসল কাটার সময়সূচিতে।

সমস্যা কী?
➡️ভিসা প্রসেসিং বিলম্ব – কনস্যুলেট থেকে আবেদন যাচাই ও অনুমোদনে অতিরিক্ত সময় লাগায় ধারাবাহিকতা ভাঙছে।
➡️শ্রম সংকট – কৃষি, ক্ষুদ্র ও নির্ভরশীল উৎপাদন খাতে বিদেশি শ্রমিকদের ভূমিকা সীমিত হচ্ছে।
➡️অবৈধ অবস্থার– যেসব শ্রমিক নিয়মিতভাবে অনিয়ম করে দেশটিতে থেকে যায়, তাদের জন্য সরকারের একটি বিশেষ ‘রেসিডেন্স পারমিট ও কাজের অনুমতি’ স্কিম চালু হয়েছে, যা আনুমানিক ৩০,০০০ অভিবাসীকে সুবিধা দেবে—বিশেষ করে আলবেনিয়া, জর্জিয়া ও ফিলিপাইন থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য ।
সরকারের পদক্ষেপ
মাইগ্রেশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগ: দুই মন্ত্রণালয় মিলিতভাবে ভিসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে দ্রুত আইন ও প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করছে—মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, মে–জুন সময়ের মধ্যেই বিষয়টির চূড়ান্ততা হবে ।
বিলম্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে ক্যাবিনেট অনুমোদন: মে মাসে পরিকল্পনা উপস্থাপন ও জুনেই আইন পাসের আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী ।
বিদেশি কৃষি শ্রমিক চুক্তি: মিসরের সঙ্গেও ৫,০০০ শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া গৃহীত হয়েছিল, কিন্তু অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে চুক্তি কার্যকর হয়নি ।
বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্য
➡️বাংলাদেশ প্রভূত গুরুত্ব পাবে: ইতিমধ্যে ২০২২ সালে বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে একটি MOU স্বাক্ষর হয়েছে, যা বিশেষভাবে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মৌসুমি কৃষি ভিসা সুবিধা দেবে। এর ফলে গ্রিসে কর্মীর সংখ্যা বাড়বে ও বাংলাদেশিরা বৈধভাবে কাজের সুযোগ পাবে।
➡️প্রেরিত রেমিট্যান্স বৃদ্ধি: কর্মীর সংখ্যা বাড়লে বাংলাদেশের পরিবারগুলোকে প্রেরিত অর্থের পরিমাণও বাড়বে—এটা গ্রাউন্ড‑লেভেলে অর্থনৈতিক সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।
➡️অবৈধতার ঝুঁকি কাটবে: বৈধ ভিসার কারণে অনিয়মিতভাবে অবস্থান করা থেকে মুক্তি মিলবে—এতে দীর্ঘমেয়াদি বৈধতাও পাওয়া যেতে পারে।
কীভাবে উপকৃত হবেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা?
➡️সরঞ্জামের সহজতা: জুনের মধ্যে বিলম্ব কাটিয়ে প্রবেশ ও কাজের অনুমোদন সহজতর হবে।
➡️বৈধ কর্ম অধিকার: বৈধ রেসিডেন্স এবং seasonal agricultural worker হিসেবে অত্যাধুনিক অধিকার নিশ্চিত হবে।
➡️বিস্তৃত সুযোগ: শুরুতে কৃষি খাতে সীমাবদ্ধ হলেও ভবিষ্যতে অন্যান্য সেক্টরে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার দ্বারও খুলে যেতে পারে।
➡️আর্থিক নিরাপত্তা: বৈধ রুটে যাওয়ায় ওয়েজ সুরক্ষা ও নিয়োগকারী সংস্থার দিক থেকে কাজের নিশ্চয়তা থাকবে।
আগামী চ্যালেঞ্জ
➡️শেনজেন চুক্তির বাধা: আইনগত কাঠামোতে কিছু ‘শেনজেন সেকেন্ডারি মুভমেন্ট’ সংক্রান্ত জটিলতা থেকে যেতে পারে—যেমন, অন্য EU রাজ্যে প্রবেশ, পরিবার নিয়ে যাওয়ার বিষয় ইত্যাদি ।
➡️প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন: আইন পাসের পর প্রশাসনিক স্তরে কীভাবে কার্যকর করা যায়, তা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
গ্রিস সরকার দেশের কৃষি খাতের সংকট নিরসনে ও সঠিক শিল্প খাতে বৈধ বিদেশি শ্রমিক নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিনের ভিসা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশের জন্য এটি এক দারুণ সুযোগ: বৈধভাবে, মর্যাদার সাথে ও নির্ভরযোগ্য সুযোগ থাকবে গ্রিসে বৈধ চাকরির নিয়োগে।
তবে গ্রিসের প্রশাসনিক কাঠামো ও শেনজেন আইন বাস্তবায়নের ধরণ পর্যবেক্ষণ করে সঠিক প্রস্তুতি ও তথ্যভিত্তিক কর্মসূচি নিতে হবে। কৃষি খাতকে নতুন প্রাণ দিতে ও শ্রমিকদের ভবিষ্যতের জন্য এটি হতে পারে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
_edited.jpg)



Comments